জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ কীভাবে এত দূরের মহাবিশ্বকে দেখতে পারে?
কল্পনা করুন, আপনি একটি টাইম মেশিনে চড়ে মহাবিশ্বের অতীত দেখতে যাচ্ছেন। অসম্ভব শোনাচ্ছে? জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ (JWST) সেই অসম্ভবকেই বাস্তবে রূপ দিয়েছে। কিন্তু কীভাবে?
আলো মানে অতীতের ছবি
মহাবিশ্বের যে কোনো বস্তু থেকে আসা আলো আমাদের কাছে পৌঁছাতে সময় লাগে। উদাহরণস্বরূপ, সূর্যের আলো পৃথিবীতে পৌঁছাতে লাগে ৮ মিনিট। এখন ভাবুন, কোটি কোটি আলোকবর্ষ দূরের কোনো গ্যালাক্সির আলো আমাদের কাছে আসতে কত বছর লাগে! জেমস ওয়েব এই আলো সংগ্রহ করে, মানে এটি আসলে মহাবিশ্বের অতীতের ছবি আমাদের সামনে তুলে ধরে।
ইনফ্রারেড প্রযুক্তি: চোখের আড়ালের জগত
- দূরবর্তী গ্যালাক্সি থেকে আসা আলো মহাবিশ্বের প্রসারণের কারণে রেডশিফট হয়ে ইনফ্রারেডে রূপ নেয়।
- সাধারণ টেলিস্কোপ এগুলো দেখতে পারে না, কিন্তু জেমস ওয়েবের ইনফ্রারেড সেন্সর এগুলো স্পষ্টভাবে ধরে ফেলে।
বিশাল আয়না ও ঠাণ্ডা পরিবেশ
জেমস ওয়েবের আয়না ৬.৫ মিটার চওড়া, যা হাবলের তুলনায় অনেক বড়। এই আয়না বেশি আলো সংগ্রহ করতে পারে, ফলে বেশি বিস্তারিত ছবি পাওয়া যায়। টেলিস্কোপটি কাজ করে প্রায় -২৩৩°C তাপমাত্রায়, যাতে ইনফ্রারেড সিগন্যাল সঠিকভাবে ধরা যায়।
Lagrange Point: মহাবিশ্বের ভিউ পয়েন্ট
জেমস ওয়েবকে রাখা হয়েছে L2 পয়েন্টে (পৃথিবী থেকে ১৫ লাখ কিমি দূরে)। কেন এখানে?
- সূর্য, পৃথিবী, চাঁদ সবসময় একদিকে থাকে।
- স্থিতিশীল তাপমাত্রা বজায় থাকে।
- মহাশূন্যের গভীর অন্ধকারে পর্যবেক্ষণ সহজ হয়।
কেন এত দূরে দেখা গুরুত্বপূর্ণ?
- মহাবিশ্বের প্রথম তারকা ও গ্যালাক্সির জন্মের ছবি পাওয়া যায়।
- গ্রহের বায়ুমণ্ডলে পানি, কার্বন, অক্সিজেন শনাক্ত করা যায়।
- ডার্ক ম্যাটার ও ডার্ক এনার্জির রহস্য বোঝা সম্ভব।
সর্বশেষ কথা
জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ শুধুমাত্র একটি বৈজ্ঞানিক যন্ত্র নয়—এটি সময়ের জানালা। মহাবিশ্বের অতীতের গভীরে তাকিয়ে এটি হয়তো আমাদের অস্তিত্বের প্রশ্নের উত্তর দেবে।
আপনার মতে জেমস ওয়েবের সবচেয়ে বড় আবিষ্কার কী হতে পারে? নিচে কমেন্ট করুন।
Copyright
BigganIQ